বিশেষ প্রতিনিধি,দৈনিক সময়ের কথাঃ
রাজধানীর খিলক্ষেত থানাধীন নামার পাড়া বোর্ট ঘাট এলাকায় প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বাড়ি দখলের গুরুতর অভিযোগ উঠে এসেছে।ভুক্তভোগী বাড়ির মালিক জার্মান প্রবাসী কাজী ফায়ের মাহমুদ ইতিমধ্যে খিলক্ষেত থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে পুলিশি সহায়তার জন্য আবেদন করেন বলে সূত্রে জানাযায়।
ভুক্তভোগী বাড়ির মালিক বলেন,আমি(কাজী ফায়ের মাহমুদ) এবং অভিযুক্ত প্রতারক তাকবীর ইসলাম একে অপরের পরিচিত বিধায় গত ০১/১০/২০১৪ ইং তারিখে উভয়ে মিলে খিলক্ষেত থানাধীন নামার পাড়া বোর্ট ঘাট এলাকায় ৭৮৮৭ নং দলিল মূলে ৩ কাঠা (তিন কাঠা)এবং ১১/০৯/২০১৪ ইং তারিখে ৭১৮৯ নং দলিল মূলে ২.১৬৭ কাঠা (দুই দশমিক ১৬৭ কাঠা) সর্বমোট ৫.১৬৭ কাঠা (পাঁচ দশমিক ১৬৭ কাঠা)সম্পত্তি ক্রয় করে ভোগ দখল করে আসছি।ক্রয়কৃত উক্ত খালি জায়গা আমরা উভয় পক্ষ মিলে যৌথ খরচে বালি দিয়ে ভরাট করে দুইতলা বিশিষ্ট ভবণ নির্মাণ করি।বর্তমানে উক্ত ভবনটিতে দোকানঘর সহ মোট ১৬ টি পরিবার বসবাস করে।
কাজী ফায়ের মাহমুদ আরও বলেন,আমি প্রবাসে থাকায় উক্ত ভবনটি দেখাশোনার দায়িত্ব সম্পূর্ণ ভাবে সরল মনে বিশ্বাস করে প্রতারক তাকবীর ইসলাম কে দিয়ে থাকি।অভিযুক্ত প্রতারক তাকবীর ইসলাম ২০১৮ পর্যন্ত আমাকে উক্ত ভবণ থেকে আসা ভাড়ার ৫০% (অর্ধেক) পাঠিয়ে দিতেন।কিন্তু হঠাৎ ২০১৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আমাকে উক্ত ভবণ থেকে আসা ভাড়ার কোন টাকা দিচ্ছে না।এই বিষয়ে অভিযুক্ত তাকবীর ইসলামের সাথে ঐ সময়ে প্রবাস থেকে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি আমাকে কীসের বাড়ি ভাড়ার টাকা?তুই দেশে আস,তুরে মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়ে দেব বলে হুমকি দেয়।যেহেতু প্রতারক তাকবীর ইসলাম ছিলেন আওয়ামী ফ্যাসিস্ট দোসর।আর আমি বিরোধী দলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম।তাই তার ফ্যাসিস্ট ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সে আমাকে দেশে না আসতে এবং বিচার না চাইতে বাধ্য করে।
ভুক্তভোগী ফায়ের মাহমুদ বলেন,আমি আওয়ামী বিরোধী রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় এবং অভিযুক্ত প্রতারক তাকবীর ইসলামের হুমকির ভয়ে দেশে আসতে পারিনি।গত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার খুনি হাসিনা সরকারের ঐতিহাসিক পতন হলে আমি দেশে আসি।কিন্তু দেশে এসে আমি খিলক্ষেত নামার পাড়াস্হ আমাদের সেই ভবণে গেলে প্রতারক তাকবীর ইসলামের ভাড়াটিয়া গুন্ডা কেয়ারটেকার আবুল হোসাইন এবং তাকবীর ইসলামের ভাইবোন মিলে উল্টো আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এবং তাকবীর ইসলাম কে ফোন ধরা দিয়ে তাকবীর ইসলাম বলেন তুই আমার সাথে এই বিষয়ে পর্তুগাল এসে দেখা কর।তুই আমার হাত কত লম্বা জানিস না।ঐখান থেকে এখন চলে যা।বেশি বাড়াবাড়ি করলে তুর প্রাণ ও চলে যাবে বলে তাকবীর ইসলাম অপরপ্রান্ত থেকে আমাকে মোবাইলে হুমকি দেয়।অথচ একজন ফ্যাসিস্ট দোসর হয়ে তাকবীর ইসলাম বর্তমানে কীসের শক্তিতে আমাকে এমন হুমকি দিতে পারে এই প্রশ্ন আজ সবার?এমতাবস্থায় আমি বর্তমানে খুবই ভয়ে দেশে দিন পার করছি বলে গুরুতর অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী কাজী ফায়ের মাহমুদ।তিনি দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং দখলকৃত সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করেন।
স্হানীয় সূত্রে জানাযায়, স্হানীয় কয়েকজন প্রবীণ সচেতন মানুষ “দৈনিক সময়ের কথা”পত্রিকার অনুসন্ধানী টীম কে বলেন,আমরা তখন (২০১৪ সাল) থেকে দেখেছি এই সম্পত্তি কাজী ফায়ের মাহমুদ ও তাকবীর ইসলাম এই দুইজন মিলে ক্রয় করে সেখানে তারা যৌথ খরচে ভবণ নির্মাণ করে। কিন্তু হঠাৎ কাজী ফায়ের মাহমুদ প্রবাসে অবস্থান করায় সম্পূর্ণ দেখাশোনার দায়িত্বে তাকবীর ইসলাম কে দেখা যায়।তাকবীর ইসলাম তৎকালীন আওয়ামী রাজনীতির সাথে পরোক্ষভাবে জড়িত থাকায় এবং স্হানীয় আওয়ামিলীগ নেতাদের সাথে তার দহরমমহরম সম্পর্ক থাকায় তিনি এলাকায় প্রভাব কাটিয়ে চলতেন।কিন্তু গত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলে সে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তবে শুনেছি নাকি এখন তাকবীর ইসলাম তার ভাইবোন কে বাড়ি দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ে নিজে বিদেশে অবস্থান করছে।
ফায়ের মাহমুদ বিষয়ে স্হানীয়দের বক্তব্য, সচেতন কয়েকজন প্রবীণ স্হানীয় বাসিন্দা জানান,কাজী ফায়ের মাহমুদ এর প্রতি তাকবীর ইসলামের এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক।আমরা শতভাগ নিশ্চিত এই সম্পত্তি তারা দুইজনই কিনেছে এবং ভবনটিও দুইজনই নির্মাণ করেছে।সুতরাং প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ উনারা যেন কাজী ফায়ের মাহমুদ এর ন্যায্য পাওনা সম্পত্তি তাকে ফিরিয়ে দিতে সাহায্য করে।
খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন,ভুক্তভোগী কাজী ফায়ের মাহমুদ আমাদের কাছে সাধারণ ডায়েরি করেছেন।ইতিমধ্যে আমি আমার একজন এস আই কে ঘটনার সঠিক তদন্ত করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।আশা করি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধানের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত তাকবীর ইসলামের বর্তমান বাড়ির কেয়ারটেকার আবুল হোসাইনের সাথে উক্ত বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি “দৈনিক সময়ের কথা”কে বলেন,কাজী ফায়ের মাহমুদ আসলে বাড়ির অর্ধেক সম্পত্তি অর্থাৎ আড়াই কাঠা জমির মালিক। যেটা তাকবীর ইসলাম ও স্বীকার করেছেন বলে জানান তিনি।তবে কেন?কী কারণে কাজী ফায়ের মাহমুদ কে সম্পত্তি বুঝিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছন তাকবীর ইসলাম তার বিস্তারিত কিছু জানেন না তিনি।