ঢাকাFriday , 19 September 2025
  • অন্যান্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জাতীয় সংসদে প্রবাসীদের সংরক্ষিত আসনের দাবি জোরদার হচ্ছে

admin
September 19, 2025 11:30 pm । ৯৬ জন
চবি:সংগৃহীত
Link Copied!

ফায়ের মাহমুদ,জার্মানি থেকেঃ

প্রায় দুই কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনের দাবি জানিয়ে আসছেন। দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে সর্বাধিক অবদান রাখলেও সংসদে তাদের জন্য কোনো প্রতিনিধি নেই। এ অবস্থায় এবার প্রবাসীরা ৩০ নয়, ৫০ আসন সংরক্ষণের দাবি তুলেছেন।

দাবি বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও মধ্যপ্রাচ্যে প্রবাসীরা বিভিন্ন গ্রুপ ও সংগঠন গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। তাদের মতে, সংসদে প্রবাসীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হলে শুধু অধিকার রক্ষা নয়, দেশের সামগ্রিক উন্নয়নেও তারা সরাসরি ভূমিকা রাখতে পারবেন।

বৈষম্যমূলক আইন নিয়ে ক্ষোভ

প্রবাসীরা অভিযোগ করেন, অতীতের কোনো সরকারই এ দাবির প্রতি কর্ণপাত করেনি। বরং ২০১৬ সালের নাগরিকত্ব আইন করে বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণকারীদের সংসদ নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। প্রবাসীদের মতে, এ আইন বৈষম্যমূলক, যা অবিলম্বে বাতিল করা প্রয়োজন।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিছু উদ্যোগ নিলেও তা ভবিষ্যতের জন্য যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন প্রবাসীরা। তাদের অভিযোগ, আসন্ন সংসদে প্রবাসীদের আসন সংরক্ষণ বিষয়ে এখনো কোনো নিশ্চয়তা নেই।

সম্পত্তি দখল ও হয়রানির শিকার প্রবাসীরা

দীর্ঘদিন বিদেশে অবস্থান করায় অনেক প্রবাসীর জমি-জমা ও সহায়-সম্পত্তি দখল করে বসে প্রভাবশালী চক্র কিংবা নিকটাত্মীয়রা। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে প্রবাসীদের ওপর নেমে আসে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন। অনেক ক্ষেত্রে হামলা-মামলার শিকার হয়ে ভয়ে তারা বিচার চাইতেও পারেন না। এমনকি কেউ কেউ প্রাণ নিয়ে দেশে ফেরার বদলে সরাসরি বিমানে চড়ে বিদেশে ফিরে গেছেন। এসব কারণেই প্রবাসীরা মনে করেন, সংসদে তাদের কণ্ঠস্বর তোলা একান্ত প্রয়োজন।

প্রবাসী নেতাদের অভিমত

জার্মান প্রবাসী ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কাজী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “দেশের অর্থনীতিকে দীর্ঘদিন ধরে সচল রাখলেও প্রবাসীরা প্রাপ্য মর্যাদা পাননি। এখনই সময় জাতীয় সংসদে প্রবাসীদের কণ্ঠস্বর প্রতিষ্ঠা করার।”

হাইকোর্টে রিট

জাতীয় সংসদে প্রবাসীদের সংরক্ষিত আসনের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আবুল কালাম আজাদ ও এস এম রফিকুল পারভেজ ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। এর আগে একই বছরের অক্টোবর মাসে তারা আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর আবেদনপত্র জমা দেন। এতে প্রবাসীদের জন্য সংসদে নির্দিষ্টসংখ্যক আসন সংরক্ষণ এবং প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী প্রবাসীদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়।

আবেদনপত্রে ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। রিটে উল্লেখ করা হয়, নারীদের জন্য সংসদে সংরক্ষিত আসন রয়েছে; একইভাবে প্রবাসীদের জন্যও আসন সংরক্ষণ জরুরি।

রিটে দুই প্রবাসী বলেন, প্রায় দুই কোটি প্রবাসী বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারছেন না। সংসদে তাদের জন্য কোনো প্রতিনিধি না থাকায় এটিকে তারা বৈষম্যমূলক আচরণ হিসেবে দেখছেন। রিট আবেদনে আরও বলা হয়, এ বৈষম্য বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭, ২৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদে বর্ণিত মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।

তাদের দাবি, দেশে-বিদেশে নানা সমস্যায় জর্জরিত প্রবাসীদের অধিকার রক্ষায় জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।