ঢাকাTuesday , 23 September 2025
  • অন্যান্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কূটনৈতিক নিরাপত্তায় চরম গাফিলতি, জবাবদিহি কোথায়?

admin
September 23, 2025 7:54 pm । ৬৩ জন
Link Copied!

ফায়ের মাহমুদ,জার্মানি থেকেঃ

সম্প্রতি নিউইয়র্কে এনসিপি নেতা আখতার ও জারার ওপর সংঘটিত কাপুরুষোচিত হামলা দেশে ও বিদেশে, গোটা প্রবাসী সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিশেষ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তার দায়িত্ব পালনে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন।

দেশে স্বৈরাচারী শাসনের পতন হলেও, সেই শাসনের দোসররা আজও সক্রিয়। দেশে ও বিদেশে ছড়িয়ে থাকা এই চক্রের সদস্যরা কৌশলে সরকারি প্রতিষ্ঠানে, দূতাবাসে, এমনকি সচিবালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক জায়গায় ঢুকে আছে। তাদের কেউ কেউ দূতাবাসের দেয়ালের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছে, কেউ বা আমাদের বসতি এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, আবার অনেকে সরকারি দপ্তরের অভ্যন্তরে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নিজেদের রক্ষা করে চলেছে। এরা সবাই এক সময়ের লুটপাটের টাকায় প্রবাসে বিলাসী জীবন যাপন করছে।

আখতার ও জারার উপর এই হামলা কেবল ব্যক্তিগত নয়, এটি রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সুপরিকল্পিত এবং ভয়ংকর একটি বার্তা বহন করে। এই ঘটনার দায় শুধু হামলাকারীদের নয়, বরং রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট অঙ্গ এবং কর্মকর্তারাও দায় এড়াতে পারেন না। বিশেষ করে যখন জানা যাচ্ছে, জাতিসংঘ অধিবেশনে অংশ নিতে যাওয়া প্রতিনিধিদের আগমনের সময়সূচি গোপন রাখা হয়েছিল— যা একটি অত্যন্ত গুরুতর প্রশাসনিক ব্যর্থতা এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করেছে।

এই হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি, আখতার ও জারার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যারা ব্যর্থ হয়েছেন, সেই সব কর্মকর্তা, বিশেষ করে রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসের অন্যান্য দায়িত্বপ্রাপ্তদের অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।

কেবল লোক দেখানো তদন্ত কিংবা চিঠিপত্র চালাচালি যথেষ্ট নয়। এই ঘটনার পেছনে যে কাঠামোগত দুর্বলতা ও রাজনৈতিক অভ্যন্তরীণ দোসরদের সক্রিয়তা রয়েছে, তা উপড়ে ফেলতে হবে। এখনই সময় প্রতিষ্ঠানের ভিত্তিগত সংস্কারের। আমাদের কূটনৈতিক মিশন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাঠামোতে নৈতিকতা, সততা ও জবাবদিহিমূলক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শুধু তাই নয়, সচিবালয়সহ সামগ্রিক আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থায় শুদ্ধি অভিযান চালানো এখন সময়ের দাবি।

দেশের স্বার্থে, জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে, এবং গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে এই কাজ আর বিলম্ব করা চলবে না।