জেলা প্রতিনিধি,কক্সবাজার:
টেকনাফ উপজেলার নয়পাড়া বড়তলী গ্রামে গতকাল সন্ধ্যা ৮ টার দিকে সংঘটিত একটি সন্ত্রাসী হামলা ঘিরে এলাকায় চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। হামলায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে, যিনি স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন মৎস্যজীবী লীগের সদস্য সচিব হিসেবে পরিচিত।
হামলার শিকার সাদ্দাম হোসেন নামে একজন সাধারণ নাগরিক, যিনি পেশায় একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তার পরিবারের সদস্যরা জানান, সন্ত্রাসীরা অতর্কিতে তাদের বাড়িতে হামলা চালায়, ব্যাপক ভাঙচুর করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো নয়পাড়া বড়তলী গ্রামজুড়ে আতঙ্কের ছায়া নেমে এসেছে।
ছৈয়দ নুর এর পরিবারের বক্তব্য “৪ অক্টোবর সন্ধ্যা ৮ টার দিকে মোজাম্মেল হক, আব্দুল্লাহ এবং হারুন ও আব্দুল আজিজসহ আরও কয়েকজন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র ও কিরিচ নিয়ে আমাদের বাড়িতে হঠাৎ হামলা চালায়। তারা ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে, জানালার কাঁচ ভাঙে এবং আসবাবপত্র তছনছ করে দেয়। আমরা চিৎকার করলে তারা গালিগালাজ করে এবং প্রাণে মারার হুমকি দেয়।”
একপর্যায়ে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় কেউ শারীরিকভাবে আহত না হলেও মানসিকভাবে সাদ্দাম পরিবার ও আশপাশের লোকজন ভীষণ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
অস্ত্র ও সহিংসতা: জননিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, হামলাকারীদের হাতে ছিল দেশীয় কিরিচ, লোহার রড ও লাঠি। তারা অত্যন্ত বেপরোয়া আচরণ করছিল এবং বারবার নিজেদের রাজনৈতিক পরিচয় জাহির করছিলো, যেন কেউ প্রতিবাদ না করে।
স্থানীয় একজন যুবক বলেন,“এরা শুধু ইসমাঈলের বাড়িতেই নয়, এর আগেও এলাকায় দম্ভ বা ভয় দেখিয়ে ঘুরে বেড়ায়। কারো সাহস নেই প্রতিবাদ করার, কারণ মোজাম্মেল হক মৎস্যজীবীলীগের সদস্য সচিব
রাজনৈতিক ছত্রছায়া ও প্রশাসনিক নিস্ক্রিয়তা নিয়ে ক্ষোভ
মোজাম্মেল হক স্থানীয় পর্যায়ে একজন চিহ্নিত রাজনৈতিক কর্মী, যিনি দীর্ঘদিন ধরে সরকারি দলের একটি অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে তিনি আইনের হাত থেকে বারবার পার পেয়ে যাচ্ছেন।
একজন প্রবীণ বাসিন্দা বলেন,“প্রশাসন জানে এই লোক কাদের সঙ্গে চলে। তাই কেউ অভিযোগ করলেও খুব একটা ফল হয় না। সাধারণ মানুষ ভয়ে মুখ খুলতে চায় না।”
আইনি পদক্ষেপ ও অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি,হামলার শিকার সাদ্দাম হোসেন পরিবার বর্তমানে থানায় লিখিত অভিযোগ (FIR) দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা চান হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনা হোক এবং তাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।
ছৈয়দ নুর এর বক্তব্য:“আমি একজন নিরীহ মানুষ। রাজনীতি করি না। আমার পরিবারের কারও সঙ্গেও কারও কোনো ঝামেলা নেই। হঠাৎ কেন আমাদের টার্গেট করা হলো, বুঝতে পারছি না। প্রশাসনের কাছে আমি বিচার চাই।”
টেকনাফ মডেল থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, “আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ রাজনৈতিক পরিচয় দেখিয়ে অপরাধ করলে তাকেও ছাড় দেওয়া হবে না।”
তবে অভিযোগপত্র জমা না হওয়ায় এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হয়নি।এলাকায় নিরাপত্তাহীনতা ও ভবিষ্যৎ আশঙ্কা
হামলার পর থেকে নয়পাড়া বড়তলীতে ভয়ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এই ধরনের সন্ত্রাসী হামলা আবারও ঘটতে পারে।
স্থানীয়দের বক্তব্য:দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তিসাদ্দাম হোসেন, ও ছৈয়দ নুর এর পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পুলিশি টহল জোরদার করা এবং রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।